শুধু স্বাদ ও তৃপ্তিতেই নয়। ভারতীয় মশলা হিসেবে বেশিরভাগই ওষুধীগুণে ভরপুর জিরা। ভারতীয় রান্না জিরার বহুল ব্যবহার। শুধু ভারতীয় রান্নায়ই নয় ইউরোপ, এশিয়াসহ ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলগুলোতেও রান্নার জিরার ব্যবহার করা হয়। খ্রিস্টের জন্মের কয়েক হাজার বছর পূর্ব হতে পারস্য, ব্যাবিলন ও মিশরীয় সভ্যতায় জিরে খাওয়ার প্রচলন আগে থেকেই ছিল। জিরা রান্নার স্বাদ বাড়ার পাশাপাশি এর রয়েছে নানা প্রকার স্বাস্থ্যগুণ।
জিরা অনেক দিন হতে হজমের সহায়ক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। জিরের প্রবাবে বাড়ে হজমে সহায়ক উৎসেচকের ক্ষরণ। যারফলে হজেমের প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। তা ছাড়া জিরার জন্য যকৃৎ বা লিভার বা বাইল ক্ষরণ বাড়ে। এই পিত্তও সহায়তা করে থাকে পরিপাক যন্ত্রের। তাই হজমের সমস্যা এড়াতে জিরা খেতে পারেন। আপনি হয়ত জানেন না যে, জিরের দানা প্রাকৃতিকভাবে লৌহ এর উৎস।
১ চামচ জিরের গুড়োতে রয়েছে ১.৪ মিলিগ্রাম আয়রণ। যা শরীরের জন্য অনেক উপকারি। অনেক গর্ভবতী নারী আয়রণের অভাবে ভুগে থাকেন তাদের জন্য জিরা হতে পারে আয়রনের অন্যতম উৎস।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে. শরীরের ক্ষতিকর ট্রাইগ্লিসারইড নিয়ন্ত্রিত থাকে জিরার প্রভাবে। সারাসরি জিরা সেবনের পাশাপাশি জিরে ভেজানো জলের নানা উপকারিতার কথা বলে গিয়েছেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসাশাস্ত্র। রাতে ১ কাপ জলে ভিজিয়ে রাখুন অর্ধেক চামচ জিরা। এরপর সকালে উঠে খালি পেটে পান করুন সে জিরা মিশ্রিথ জল। জিরা মিশ্রিত জল পান করার রয়েছে অনেক গুণ।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক জিরার স্বাস্থ্যগুণ: হজম প্রক্রিয়া ও পাকস্থলীর স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক জিরা। বাড়তি ওজন ও মেদ ঝরিয়ে শরীর করে স্লিম ও সুন্দর। অন্তঃসত্ত্ব অবস্থায় হজমের গণ্ডগোল কমিয়ে রাখতে সহায়তা করে জিরা। সেই সাথে মাতৃদুগ্ধের পরিমাণও বৃদ্ধি করে জিরা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক জিরা। মথুমেহ রোগীদের জন্যও দারুন কাজের এই জিরা। লিভার ভালো, সুস্থ্য-সবল রাখতে কাজ করে জিরা। রক্তস্বল্পতা দূর করে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে জিরা। চেহারায় বয়সের ছাপ এবং ব্রণ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে জিরা। জিরা ভেজানো পানি শরীরের দূষিত পদার্থ দূর করে থাকে। জিরার মাঝে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট দেহের এবং শরীরের ভিতরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে দিতে পারে। সেই সাথে দেহের পানি শূন্যতা দূর করে দেহের আদ্রতা ভারসাম্য বজায় রাখে।